Friday, November 3, 2017

The Bong Commuter : GANGANI – THE (GRAND) CANYON OF BENGAL

The Bong Commuter : GANGANI – THE (GRAND) CANYON OF BENGAL:           Welcome to the “GANGANI – THE (GRAND) CANYON OF BENGAL”.  Whenever the word “Canyon” is used about a destination in India,...

Trek Himalaya's : Trek to Vasuki Tal 4900 mtr. (Part -4)

Trek Himalaya's : Trek to Vasuki Tal 4900 mtr. (Part -4): পর দিন সকালে ঘুম ভাঙ্গল চায়ের ডাকে। চা খেয়ে সমস্ত কাজ শেষ করে তাঁবু গুটিয়ে সবাই তৈরী। আমাদের তাঁবুর কাছে এখনো রোদ এসে পৌঁছয়নি, তাই শরীর ...

Trek to Vasuki Tal 4900 mtr. (Part -4)


পর দিন সকালে ঘুম ভাঙ্গল চায়ের ডাকে। চা খেয়ে সমস্ত কাজ শেষ করে তাঁবু গুটিয়ে সবাই তৈরী। আমাদের তাঁবুর কাছে এখনো রোদ এসে পৌঁছয়নি, তাই শরীর নামক যন্ত্র এখনো চাঙ্গা হয়নি। চা আর খাওয়ার খেয়ে শরীর নামক যন্ত্র কে গরম করার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে রোদ না এলেও কিন্তু আশে পাশের উঁচু পিকের মাথায় রোদের ঝলক বেশ ভালোই দেখা যাচ্ছে!! আবহাওয়া ও বেশ ঝকঝকে!!
চিরবাসা থেকে ভাগীরথী নদীর ডান দিকে এক উঁচু পাহাড়!! 

আজ যাবো ভুজবাসা, যদিও গত কাল আমাদের চলে যাওয়ার কথা ছিল ভুজবাসা তে, কিন্তু দাদার শরীর খারাপের জন্য চিরবাসা তে থাকতে হয়। যাই হোক, আজ দাদা কে দেখলাম বেস ফুরফুরে, জিজ্ঞাসা করলাম সব ঠিক ঠাক তো?? বলল হ্যাঁ গত কালের থেকে অনেক টাই ঠিক। আবার প্রশ্ন - কোন অসুবিধা?? উত্তর পেলাম - না কোন অসুবিধা নেই। এর মধ্যেই আমরা ঠিক করেছি দাদা আমাদের সাথেই ভুজবাসা যাবে, তারপর টা অবস্থা বুঝে ব্যাবস্থা। আজ দাদার কাঁধে কোন মালপত্র থাকবে না। বদলে স্যাক টা যতটা পারবে বইবে পার্থ আর সায়ন। নাহ, আমি ঐ স্যাক নিতে পারবো না কারন কিছু মাস আগেই আমার পেটে একটা বড় অপারেশন হয়েছে, প্রায় ৭ ইঞ্চির বেশী কাটা হয়েছিল তাই, বেশী ভারী নেয়া যাবে না ডাক্তার স্যারের বারণ আছে। সেই মত দাদা কে বল্লাম তুমি আগে চলে যাও যেখান থেকে আমরা নীচে নেমে এসেছিলাম সেই জায়গায় উঠে ডান দিকে হাঁটতে থাকো আমরা ধরে নেব।
চিরবাসা ক্যাম্পিং গ্রাউন্ড

আমরাও সবাই খাওয়ার খেয়ে রেডি। দাদা কে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিছু পর পার্থ আর সায়ন কে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতে ওরাও বেরিয়ে পড়লো। পড়ে রইলাম আমি আর তারক দা, সাথে আমার পাহাড়ি বন্ধু রা। সমস্ত মাল পত্র গুছিয়ে তাঁবু গুটিয়ে আমি আর তারক দা ও বেরিয়ে পড়লাম এক অজানা রাস্তার দিকে। আজ আমাদের রাস্তা খুব বেশী দুর না। আমার হিসাব বলছিল খুব যদি বেশী হয় তো ঘণ্টা ৩ লাগবে ভুজবাসা পোঁছতে। আজ আমার জীবনের একটা বিশেষ দিন, স্বচক্ষে গোমুখ দর্শন হবে যদিও সেটা কিছু টা দূর থেকেই, হোক-না দূর থেকে দেখতে তো পাবো। তাই একটা আলাদা অনুভূতি নিয়ে ছুটে চলেছি ঐ অমোঘ টানে। কিন্তু এক পেট খাওয়ার খেয়েই স্যাক কাঁধে ঐ টুকু চড়াই চড়তেই বুকে হাঁপ ধরে। তাছাড়া বেশ কিছু মাস পাহাড়ের সাথে চোখা চুখি হয়নি, অসুস্থতার কারনে মাঠের প্র্যাকটিস ও করতে পারিনি, নুন্যতম প্রস্তুতি ছাড়াই পাহাড়ে হাঁটছি। তাই কষ্টটা একটু বেশী ই হচ্ছে, শুধুমাত্র নিজের বিগত অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে চলেছি। উঠে এলাম ঐ ছোট্ট চড়াই এর মাথায়। এইবার চলা শুরু করলাম ডান দিকে।
ছবির বাম দিকের ঐ উঠে যাওয়া রাস্তা ধরেই এগোতে হবে সামনের দিকে!! 

রাস্তায় মাঝে মধ্যেই দেখা মিলছে কিছু কিছু বাচ্ছা ছেলে মেয়ে দের সাথে, কেউ উঠে চলেছে সামনের রাস্তায়, আবার কেউ নেমে আসছে তার নিজের লক্ষ্য বিন্দু স্পর্শ করে। আবার দুটি দলের সাথেও দেখা হল, ঐ দলের সাথে ৩টি মেয়ে ও ছিল, যারা মাউন্ট শতপন্থ (ভারতের অন্যতম কিলার মাউন্টেন নামে খ্যাত) শীর্ষারোহণ করে ফিরে চলেছে গঙ্গোত্রীর উদ্দেশে।

আনন্দের বিষয় হলও মোটা মুটি দলের সবাই প্রায় বাঙ্গালী। যেটা আমার জন্য আরও আনন্দ দায়ক। তাদের সাথে কুশল বিনিময় আর তাদের সফল অভিযানের সুভেচ্ছা জানিয়ে আবার চলা শুরু করলাম। জানি না কেন ৮ থেকে ৮০ সে ছেলে হোক বা মেয়ে, বাচ্ছা হোক বা বয়স্ক, মহিলা হোক বা সাধু কেন জানি না আমাকে দেখেই প্রায় সবাই আমার সাথে কথা বলছে। অথচ আমি চলছি আমার দলের সবার শেষে। আমার দলের কারোর কারোর পশ্ন ছিল আমার জন্য, ব্যাপার টা কি হ্যাঁ?? সবাই, সে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক বা মহিলা বা সাধু তোমার সাথে হেঁসে কথা বলছে কেন?? আমি উত্তর দিলাম তা আমি কি করে বুঝবো, কেন আমার সাথে কথা বলছে?? আমি বল্লাম আমার তো আর চারটে পা বা একটা লেজ বা দুটো শিং গজায়নি যে লোকে আমাকে দেখে হাসবে আর কথা বলার জন্য এগিয়ে আসবে কি করে করে ঘটনা ঘটলো জানার জন্য। আমার সাথীরা কিছু তেই বিশ্বাস করে-না।
ইনি চলে ছিলেন গোমুখের উদ্দেশ্যে!!  
যাই হোক এই ভাবেই চলতে লাগলাম সামনের দিকে। এই দিকে পার্থ, সায়ন, আর দাদার কারের চিহ্ন মাত্র দেখতে পাচ্ছি না!! মাথায় আবার চিন্তার মেঘ, দাদা কে নিয়ে, কারন গতকাল শরীর খারাপ ছিল, সাথে প্রথম ট্রেক। যাকেই দেখছি জামা কাপড়ের বর্ননা দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি এইরকম পোশাকে কাকেও দেখেছে কি না?? সবার উত্তর না ছিল। আরও চিন্তা বেড়ে যেতে লাগলো, আর পার্থ র ওপর আরও রাগ বাড়তে লাগল আমার। এই কারনেই কি - একটা খবর দিচ্ছে না কেন?? কি দাদা সায়ন ওর সাথে আছে। এর মধ্যেই হোল আর এক ঘটনা, এক জন কে আসতে দেখে তাকে দাঁড় করালাম। সবাই কে যেমন হিন্দিতে জিজ্ঞাসা করছিলাম এইরকম কাকেও দেখেছে কি না?? ঐ লোক টি কেও তাই করলাম হিন্দিতে, ব্লু কালার কি ফুল টিশার্ট পে, আর্মি কালারের প্যান্ট, হাত মে ইয়োলো কালার কি ফেদার জ্যাকেট হ্যা, গোরা সা, চ্যাশমা প্যাহনা হুয়া, শ্যার মে ক্যাপ এইসা কিসি লড়কা কো দেখা ক্যা?? লোকটি দেখলাম হ্যাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আবার জিজ্ঞাসা করলাম দেখা ক্যায়া?? বলে সরি আই কান্ট গেট ইউ, আই এম ফ্রম জার্মানী, সো প্লীজ সে ইন ইংলিশ ওর জার্মান। আমি নিজেই হেঁসে ফেল্লাম। আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে ও উত্তর দিল না দেখেনি, অবশ্যই ঐ যতটুকু জানি ইনজিরিতেই বললাম, জার্মান একটু বাড়া বাড়ি হয়ে যাবে। কথা না বাড়িয়ে বিদায় জানিয়ে এগিয়ে চললাম আরও আগে। যেতে যেতে একদম উত্তর পূর্ব কোনায় এক খুব চেনা এক পাহাড়ে মাথা দেখতে পেলাম। কিন্তু আমি ১০০% ঠিক ছিলাম না বলে কিছু বলিনি কাকেও, যেতে যেতেই বার বার দেখতে লাগলাম ঐ পিক কে, তারপর একদম সিওর হলাম হ্যাঁ এইটাই তো বাসুকি পর্বত। ছোটো হলেও বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে। এর আগে আমি কোন দিন নিজের চোখে দেখিনি, যা দেখেছি সব ছবিতেই তাই হতো বিশ্বয় টা একটু বেশীই ছিল আমার চোখে। সে ও একটা সময় আমাদের থেকে লুকিয়ে পড়লো, কি জানি কেন লজ্জা পেলো!! একটা জায়গায় এসে পার্থ র দেখা পেলাম, সাথে সাথেই প্রশ্ন দাদা কই?? বলল সামনে বসে গল্প করছে, ভুজবাসা চলে এসেছি, বল্লাম ওকে চল।
ভুজবাসা ক্যাম্পিং গ্রাউন্ড
একটু নিচের দিকে নেমে গেলেই ভুজবাসা ক্যাম্পিং গ্রাউন্ড।এই যায়গায় দাঁড়িয়ে খুব স্পষ্ট ভাবেই দেখা যাচ্ছে গোমুখ কে, মনে মনে একটা আলাদা শিহরন লাগলো, আরও দেখা পেলাম ঐ দূর থেকেই ভাগীরথী গ্লেসিয়ার, ভাগীরথী পিক কেও। নিচে নেমে একটা সুন্দর জায়গা দেখে ফেল্লাম আমাদের তাঁবু।
ভুজবাসায়
 আর আমি আর সায়ন মিলে শুরু করলাম রান্না ঘর বানানোর কাজ। ছোটো ছোটো পাথর দিয়ে দেওয়াল তুলে একটা জায়গা ঘিরে, ঐ দেওয়ালের উপরে ত্রিপল চাপিয়ে তৈরি করলাম রান্নার ঘর। এই দিকে পার্থ আর আমাদের পোর্টার ভাই রা মিলে তাঁবু লাগিয়ে ফেলেছে, দাদা কে জল আনতে পাঠিয়ে ছিলাম সেও ফিরেছে। সায়ন শুরু করল আমাদের জন্য চা করা, আর তার হেল্পার তার সৌমেন্দু দা। এইদিকে আমি,পার্থ, আর তারক দা মিলে শুরু করলাম জায়গা টা একটু পরিষ্কার করতে। চা রেডি, চা খেতে খেতেই একটু চারিদিক চোখ বুলিয়ে নিচ্ছি, বাম দিকে একটা রাস্তা সোজা সুজি চলে গেছে গোমুখের দিকে, গোমুখ খুব একটা বেশী দূর না, খুব বেশী হলে ঘণ্টা দেড় বা দুই, আরও একটু বাম দিক ঘেঁসে সামনে ভাগীরথী পর্বতের দল, তার নিচেই আছে ভাগীরথী গ্লেসিয়ার।পূর্ব দিকে দেখা যাচ্ছে শিবলিঙ্গ পর্বতের মাথার মুকুট টুকু।ঠিক যেন মনে হচ্ছে কেউ মাথায় সাদা রঙের রাজ মুকুট পরে বসে আছে। যেকোনো রক্ত মাংসের ও জামা কাপড় পরা সভ্য মানুষের চোখ টানছেন তিনি। আর ঐ শিভ লিঙ্গের পায়ের নিচেই আছে তপোবন। দেখা যাচ্ছে তপোবন থেকে নেমে আসা আকাশ গঙ্গা কে, অনেক বইতে ও পড়া, আর অনেকের মুখে শোনা সেই আকাশ গঙ্গা আজ স্ব-চখ্যে তার রূপের স্বাদ নিলাম। তার ঠিক নিচ দিয়ে এগিয়ে এসেছে ভাগীরথী নদী। তার গতি পথ দক্ষিণ মুখি। সেই গঙ্গোত্রী থেকে সে এখনো আমাদের ডান দিক দিয়েই বয়ে চলেছে। আর সেই বহু প্রচলিত ও বহু  লাল বাবার আশ্রম আমার পিছনে ফেলে এসেছি। এই জায়গা টা এমন কোন বড় গাছ নেই, ঠাণ্ডা বেশ, কিন্তু আবহাওয়া বেশ পরিষ্কার। তাই এখন আমরা সবাই বাইরে বসে আড্ডা তে। এই দিকে পেটে ছুঁচো ডন দিচ্ছে খাওয়ারের জন্য। সাথে কম বেশী সবার মাথা ধরেছে উচ্চতা জনিত কারনে। দলের নেতা হওয়ার জন্য দলের সবাই কে সুস্থ রাখার দায়িত্ব তাই আমার ওপরই বর্তায়। তাই কোন সদস্যকেই বসতে দিইনি, সবাই কেই তাই কিছু কিছু কাজ দিয়ে দিয়েছি। তারাও বাধ্য ছেলের মতো আমার নির্দেশ মেনে কাজ করে চলেছে। যেমন তারক দা আর সায়ন কে পাঠিয়েছি আমাদের তাঁবুর আশে পাশে যা কিছু আবর্জনা আছে সে গুলো কে পরিষ্কার করার জন্য আর সে গুলো নিয়ে এসে একটা জায়গায় জমা করে রাখতে। পার্থকে পাঠিয়েছি তাঁবুতে গিয়ে সবার শোয়ার বন্দবস্ত করে রাখতে আর কাজ হয়ে গেলে আমার সাথে যোগ দিতে। আর আমি আজ রান্না ঘরে সাথে সৌমেন্দু দা, খাওয়ার বন্দোবস্ত করেতে।
আমাদের অস্থায়ী রান্না ঘর!!
প্রথমে কফি করে পাঠিয়ে দিলাম অন্য সদস্য দের জন্য। সাথে একটা আদেশ ও, কেউ যেন এখন তাঁবুর ভেরত না যায়। বাইরেই যেন বসে থাকে!! আর আড্ডা টা যেন আমার রান্নাঘর থেকে দেখা যায়। বলার পর নিজে কফি খেতে খেতেই শুরু করলাম দুপুরের খাওয়ার। সবার মত দেরি হয়েছে আজ আমরা দেরি করেই বেরিয়েছি, প্রায় বিকাল হয়ে গেছে, তাই এখন সবজী দিয়ে চাউমিন করো, সবার আদেশ শির-ধার্য করে তাই করলাম। সবজির মধ্যে ছিল গাজর, কাঁচা মটর কড়াই, ফুল কপি, একটু বাঁধা কপি (চেয়ে পাওয়া) আর একটু আলু ব্যাস। এইদিকে সবাই ফিরেছে তাদের দেওয়া কাজ শেষ করে। সবাই একসাথে বসে আমরা সব সদস্যরা সাথে আমাদের পোর্টার ভাই রাও বসে পড়লাম চাউমিন খেতে। অন্য সদস্যদের থেকে জানলাম রান্না নাকি ভালোই হয়েছে। কি জানি কি হয়েছে, কোন দিন রান্না করিনা, ঐ যে টুকু মাঝে মধ্যে পাহাড়ে যাই তখনি ঐ একটু আধটু। উদর পূর্তি পর্ব শেষ করে আবার সদস্যদের নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম জায়গাটা ঘুরে দেখার জন্য। আর যেতে গিয়েই আমার চোখে পড়ে গেল দুটি মেয়ের উপরে, তারা দুই জনেই এতো সুন্দর যোগা করছে যে সেটা দেখার পর আমি দাঁড়িয়ে পড়ছি। তার কারন ওতো উচ্চতায় যোগা, সাথে এতো গ্রেসফুল যে না দেখলে বোঝানো যাবে না!! কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও ছবি তুলতে পারিনি!! সময় জায়গা টাকে একটু এই দিক ঐ দিক ঘুরে দেখা!! সেই মতো যে যার মতো নিজের ইচ্ছা মতো করে নিজেরাই ঘুরে বেড়াচ্ছে!! আমি ও বেরিয়ে পড়লাম ক্যামেরা আর জলের বোতল হাতে!! আমার পছন্দ ঐ ভাগীরথী কেই!! তাই আমার পা আবার সেই দিকেই!!  এই ভুজবাসা তে হাওয়ার প্রকোপ খুব বেশী, তাই কোন বড় গাছ নেই আছে গুল্ম জাতীয় ছোটো গাছ আর কিছু ঐ জাতীয় ঘাস!!
নাম না জানা বুনো ফুল
সেই আবার ভাগীরথীর সাথে গল্প করতে চলে গিয়েছি তার কাছে আমরা দুইজনে!! বসে আছি তার কাছেই, কি বলছে বুঝতে পারছি না এতোই তার গতি, শুনতে শুনতে ক্লান্তি যখন আমার চোখে, সে মাঝে মধ্যেই তার জলের ছিটেয় আমাকে আবার সজাগ করে দিয়ে বলে চলেছে তার সুখ দুঃখে কথা শোনার জন্য!!
সোজা ভাগীরথী পিক আর সামনেই ভাগীরথী নদী!! 
সূর্যের আলো কমার সাথে সাথেই তেড়ে এলো জোরাল হাওয়া, সাথে চলল তাদের তাণ্ডব লীলা!! তক্ষণে আমরা তাঁবুর আশ্রয়ে, তাঁবুও যেন উড়ে যাওয়ার জোগাড়,  ব্যেক্তি গত ভাবে আগে বহু বার এই রকম বিরূপ আবহাওয়ার মুখো মুখী হলেও আমার বাকি সদস্যরা ভয়ে কুপ কাৎ!!
সূর্য তখন অস্থাচলে!!

বিরূপ আবহাওয়ার মুখো মুখী আমরা
তাদের বুঝিয়ে বল্লাম কি হতে পারে আর ওরা কি ভাবছে। সবাই আমার কথায় চুপ করে গেলো!! জমিয়ে চলল তাস খেলা, আর সাথে চায়ের চুস্কি। আর আমাদের পাহাড়ী বন্ধুরা আমাদের ছুটি দিয়েছে রান্না থেকে। বলল ওরাই রান্না করবে, সম্মতি দিয়ে ও দিয়েছি। ওরা রান্নায় ব্যাস্ত। মাঝে মধ্যেই ডাক পড়ে সিগারেটের জন্য!! সেই আবাদার ও মেটাচ্ছি। আস্তে আস্তে হাওয়ার তীব্রতা কমেছে, মেঘ সরে গিয়ে চাঁদ মামার দেখাও মিলল। সব ছেড়ে আবার সবাই তাঁবুর বাইরে। এরই মধ্যে রান্না শেষ, মেনুতে রুটি আর সয়াবিন আলুর তরকারী, তাই দেরি না করে নিজের নিজের খাওয়ার খেয়ে আবার তাঁবু তে, সুখ নিদ্রার জন্য। কাল আবার তাড়া তাড়ি উঠে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। জানালাম সবাই কে শুভ রাত্রি।।

বিশেষ 
১.দয়া করে অপেক্ষা করুন পরের সংখ্যার জন্য, খুব তাড়া তাড়িই প্রকাশ করবো।
২.আপনাদের মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম, আশা করি জানাবেন।
৩. যদি ভালো লাগে শেয়ার করবেন আপনার বন্ধু, বা আপনার পরিচিতদের মধ্যে!!

ধন্যবাদ।।
সুব্রত!!



Thursday, September 21, 2017

Trek to Vasuki Tal 4900 mtr. (Part -3) বাসুকী তাল!!


আবার ফিরতেই হোল তৃতীয় সংখ্যা নিয়ে!! যদিও বেশ কিছু টা দেরিতেই!! কিছুটা ব্যাক্তিগত!! যাই হোক ফিরে যাই সেই পাহাড়ি অলি গলির বাঁকে!! চলুন -

হটাৎ দরজায় ধাক্কা, দাদা!! দরওয়াজা খোলো চায়ে লায়া, পিলো। আগের দিন রাতে সামনের একটি চায়ের দোকানে চায়ের অর্ডার দিয়েই রাখাছিল। সেই ছেলেটি তাকে দেওয়া সময়ে সে এসে দিয়ে গেলো আমাদের চা। সাথেই বলে দিলাম জলদি আলুকা পারাঠা বানাও হাম লোগ আরাহা-হু নিকালনা হ্যা হামকো। যে যার হাঁটার পোশাক, জুতো, পরে নিজের কাঁধের বোঝা (স্যাক) নিয়ে রেডি কারন আজ থেকে আমাদের মূল প্রোগ্রাম শুরু হবে। বাইরে স্যাক নামিয়ে সবাই তার খাওয়ার খেয়ে এক বার চা খেয়ে ৬৫০/- টাকা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম এক অজানার উদেশ্যে। এর-ই মধ্যে পেলাম এক দুর্ঘটনার খবর, এক বছর ২৫ এর মেয়ে যে গুজরাত থেকে এসেছিল পূর্ণাজনের আশায়, সে গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে পা পিছলিয়ে গেছে জলের তোড়ে ভেসে গেছে। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শুনেই মনটা কিরকম যেন ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। হিন্দু ধর্ম মতে শরীরের মৃত্যু  ঘটে, কিন্তু তার আত্মা বেঁচে থাকে, পূর্ণর জন্মের জন্য। ঐ মেয়ে টির আত্মার শান্তি কামনা করে বেরিয়ে পড়লাম।

জয় হো গঙ্গা মাইয়া বলে, নিজেদের হাতে হাত রেখে শপথ বাক্য পাঠ, যাই হয়ে যাক, যাই ঘটে যাক, কেউ কারোর সাথ ছাড়বো না। হাঁটা শুরু, প্রথমেই এক চড়াই ভেঙ্গে উঠেই এক বিপত্তি সামনে এসে হাজির। বিপত্তিটি আমাদের যে পোর্টার ভাইরা ছিল তাদের নিয়ে, হটাৎ কিছু ছেলেরা এসে হাজির, তারা আমাদের পোর্টার ভাই দের যেতে দেবে না। প্রথমে তো কিছুই বুঝলাম না ঘটনা টা কি!! দেখলাম কথা কাটা কাটি চলছে পোর্টার ভাই দের সাথে। আরে সাথে তাদের আকুতি মিনতি। পুরো দল দাঁড়িয়ে গেছে, এই দেখে এগিয়ে গেলাম ঘটনা জানার জন্য। পরে বুজলাম আসল ঘটনা টা কি। উত্তরকাশী থেকে পোর্টার এলে তাকে একটা টোকেন কাটাতে হয়, (সোজা কথায় Work Permit) সেটা আমার পোর্টার ভাই দের নেই, তাই যেতে দেবেনা। একটু বুঝে নিয়েই প্রথমে আমার পোর্টার ভাই দের একটু কড়া ধমক-ই দিলাম সাবার সামনেই। তারপর ঐ ছেলে দের সাথে কথা শুরু করলাম, দুই মিনিটের মধ্যে সমস্ত প্রবলেম শলভ হোল, কারন ছেলের দল এর সাথে আমার বেশ শখ্যতা হয়ে গেল কয়েক মিনিটের মধ্যে, ওদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে ঐ পোর্টার ভাই মাফ করিয়ে ওদের এন্ট্রি ফি হিসাবে ২০০/- টাকা দিয়ে, আবার হাঁটা শুরু করলাম। আসতে আসতে একটু একটু করে উপরে উঠছি আর আমাদের ডান দিকে ভাগীরথী নদী আমাদের থেকে একটু একটু করে আরও দূরে নিচের দিকে নামতে শুরু করেছে।

কিছু দুরেই পুলিশ চেক পোস্ট, আবার পুরো দল কে দাঁড়াতেই হোল, কারন এইখানে কিছু পুলিশ চেকিং হবে, কিছু প্রশাসনিক কাজকর্ম সেরে তবেই যাওয়ার অনুমতি মিলবে। আরও কিছু টিম ছিল, কিন্তু কেন জানি না, এক পুলিশ অফিসার বাইরে দাঁড়িয়ে চা খাছিলেন, আমাকে দেখে ডাক দিলেন। তখন তো আমার অবস্থা দেখার মতো হয়ে গিয়েছিল। ভয়ে আমার মুখ কাঁচু মাচু কি হয়েছে জানি না। একটা অজানা ভয় নিয়েই এগিয়ে গেলাম ওনার দিকে। আর ভাবছি আমাকে যেতে দেবে তো। নিমিষেই ভয় উধাও বদলে আমার মুখে ছিল এক গাল ভর্তি হাঁসি। আমাকে ডাকার কারণটা জানলাম ঐ অফিসারের সাথে কথা বলে। জানলাম আমার মতো নাকি ওনার শালে সাহাব কে দেখতে। বল্লেন চ্যালো পেপার ওরক ক্যার দেতে হ্যা। বলে ওনার পিছনে হাঁটা লাগালাম, সবাই কে দাঁড় করিয়ে প্রথম কাজ হোল আমার, আবার ওনার হাত দিয়ে। ৫০০/- টাকা দিতে হোল পরিবেশ দূষণের ফি (ফেরত যোগ্য)। আরও একটা ব্যাপার ঘটলো, সবার স্যাক খুলে দেখা হলেও আমার স্যাক কেউ হাত ও লাগাল না। অফিসার বল্লেন যাও সাবধানী সে, ওর সাবধানী সে ওয়াপস আও, কোই দিক্কত নেহি। ওনাকে বিদায় জানিয়ে এগিয়ে চললাম সামনের দিকে। চারিদিক সবুজ, কারন দিন দুই আগেই তুমুল বৃষ্টি হয়েছে, তাই আরও বেশী সবুজ লাগছে চারিদিকের গাছের পাতা গুলো কে। এখনো আমাদের সাথে চলেছে ভাগীরথী দেবী অনেক নীচ দিয়ে, পাথরে তার ঘর্ষণে গভীর গর্জন শোনা যাচ্ছে।

 কখনো হাঁটা কখনো একটু বিশ্রাম এই ভাবেই চলেছি। আজ আবহাওয়া বেশ মনোরম, সুন্দর রৌদ্র সাথে ঠাণ্ডা হাওয়া। আকাশে বিন্দু মাত্র মেঘের চিহ্ন মাত্র নেই।

 তাই সুদর্শন পর্বত কে খুব পরিষ্কার ভাবেই দেখা যাচ্ছে। আমার তো মনে হয় যার কেউ নেই এই রাস্তায় তার ঐ সুদর্শন পর্বত আছে তার সাথ দেওয়ার জন্য।

আমরা ছাড়াও এই পথে আরও অনেক জন সমাগম। কেউ চলেছে পূর্ণ অর্জনের আশায়, আবার কেউ শুধু মাত্র দেখতে, আর খুব কম জন কেই পেয়েছি আমাদের মতো যারা পর্বত পদ যাত্রায় নেমেছে।

 আজ আমার দাদা (সৌমেন্দু) সবার শেষে চলছে তাই আমি তার সাথে। কারন এইটা দাদার প্রথম ট্রেক, এর আগে কোথাও কোন ট্রেক করেনি। আজ রাস্তা বেশ সহজ সেরকম কোন অসুবিধা হচ্ছে না। এক সময় রাস্তা দেখলাম একদম নীচে নেমে গেছে। ওখানে নেমেই দেখি পার্থ দাঁড়িয়ে, পার্থ দাদার স্যাক নিয়ে আবার হাঁটা লাগাল দাদাকে একটু রিলিফ দেওয়ার জন্য। নদীর ওপর একটা অস্থায়ী সেতু আর জল এতো তাই পরিষ্কার যে ঐ জলটাই খেতে ইচ্ছা হোল!! বসে পড়লাম সবাই মিলে জল তেষ্টা মেটানো আর একটু আরাম ও সাথে আড্ডার আশায়!!

এই পথে আমরা সবাই নতুন তাই জানতাম না কি কথায় কি!! ঐ নালা পার করে আবার একটা চড়াই চড়ে পেলাম একটা ধাবা। কথায় বলে না ঘোড়া দেখলেই সবাই খোঁড়া হয়ে যায়!! সেই রকমি হোল আমাদের অবস্থা, ধাবা দেখেই  খিদের চোট আন্দাজ করতে পারলাম। সেই আমাকেই যেতে হল খাওয়ার এর অডার দেওয়ার জন্য। দাম শুনে তো আমার মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো অবস্থা। আলুর পরোটা ১ পিস ৬০/- টাকা, একটা ম্যাগী ৬০/- টাকা, যেটা আমাদের হাওড়া তে মাত্র ১০/- টাকায় পাওয়া যায় একটা প্যাকেট, রান্না করতে আর কতো খরচ?? শুধু মাত্র জলে ফুটিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, ১ কাপ চা ২০/- টাকা, একটা পারলেজী বিস্কুটের প্যকেট ১৫/- টাকা, না না ভুল ভাবছেন, ওটা কোন বড় প্যাকেট না, আমাদের এইখানে যেটা ৪/- টাকায় পাওয়া যায় সেটাই!! একটা ৫০০ মিলি কোলা বা থামসআপ ১২০/- টাকা। কোথায় আছে না বাঙালী দাম না করে জিনিস কেনে না। এই রকম দাম শুনে রিতি মতো ভীমরী খেলাম। দলের জন্য বরাদ্য করলাম আলুর পরোটা বা ম্যাগী যেটা খুশী নিতে পারো। আর শেষে চা সবার জন্য। খাওয়ার খেলাম না টাকা খেলাম কি জানি। পেট ও ভরলো না আর মন ও ভরলো না। কারন ওটা কে আলুর পরোটা বল্লে আলুর পরোটা কেও অপমান করা হবে। আলুর চিহ্ন বলে কিছু ছিল বলে মনে হল না। ঐ খাদ্য বস্তু টা কে তার থেকে বলা ভালো পরোটা। যাই হোক খেয়ে টাকা মিটিয়ে আবার নিজের বোঝা নিয়ে এগতে হবে রাস্তা এখনো বেশ কিছু টা বাকি। এর মধ্যেই সবাই শুরু তো নিজের ব্যাগ কাঁধে তুলে হাঁটা শুরু করে দিয়েছে। পেছন থেকে দাদা বলে উঠলো, সুব্রত আমার পেটে লাগছে, নিশ্বাসের অসুবিধা হচ্ছে। বলেই বসে পড়েছে। সাথে সাথেই শুরু হলও আমার মানসিক যুদ্ধ। সাথে সাথে ব্যাগ নামিয়ে পাঠালাম পেট ঠিক করতে, আর খবর পাঠালাম সামনের সদস্য দের অন্য দলের এক সদস্যের সাথে। দাঁড়িয়ে যাওয়ার জন্য। দেখলাম আমার সব সদস্যই ফিরে এসেছে। যে যার মতো করে আমাকে উপদেশ দিয়ে চলেছে। কিন্তু আমী আমার চিন্তায় মগ্ন। কি করলে সবার ভালো হবে এইটা ভেবে চলেছি। সবার বক্তব্য শুনে, সব কিছু বিচার করে ঠিক করলাম আমার হাতে তিনটে পরিবর্ত -> এক - আর কিছু টা এগিয়ে গেলেই চিরবাসা আজ রাত টা ওখানেই থেকে যাবো, তারপর কাল কি অবস্থা সেটা বুঝে ব্যাবস্থা করবো। দুই - দাদা কে নিয়ে ফিরে যাবো আমি গঙ্গোত্রী তে, তিন - আর নাহলে কোন পোর্টার কে দিয়ে নামিয়ে দেবো গঙ্গোত্রী তে, দাদা ওখানেই অপেক্ষা  করবে আমাদের ফেরার। আর আমার বাকি দল এগিয়ে যাবে। ইতি মধ্যে দাদা ও ফিরে এসেছে নিজের বায়বিক কাজ সেরে। সবাই ভোট দিল আজ চিরবাসা আগামী কাল দেখা যাবে কি অবস্থা তারপর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। পার্থ কে পাঠালাম আমাদের পোর্টার কাম গাইডের কাছে আমাদের অবস্থা বোঝানোর জন্য, কারন ওরা অনেক আগে এগিয়ে গিয়েছে। সাথে বলেদিলাম যা, ওদের ধর, আর আজ চিরবাসা তে তাঁবু লাগানোর ব্যাবস্থা করতে বল। আরও বল্লাম যেখানে রাস্তা দুই ভাগ হবে সেখানে যেন কেউ থাকে!! গিয়ে দেখি সায়ন অপেক্ষায়, আমরা বাকিরা নেমে এলাম চিরবাসা তে। আর এই চিরবাসাতেই আমাদের স্বাগত জানালো পার্থর বানানো সুস্বাদু গরম গরম চা দিয়ে। হাঁটার পর চা, যারা এই স্বাদ নিয়েছে তারাই জানে কি অমৃত সমান লাগে। দুটো তাঁবুতে আমাদের থাকার ব্যাবস্থা, আর অস্থায়ী রান্না ঘর। দুটো গাছ কে মাধ্যম করে কিচেন সিট দিয়ে লাগানো। দাদা কে পাঠিয়ে দিলাম ঘুরতে, হাতে জলের বোতল দিয়ে। সাথে বলে দিলাম পুরো জল শেষ করো আর ঘুরে বেড়াও, শুধু নদীর পাড়ে যাবে না।

 এই দিকে আমাদের রান্না তোড়জোড় শুরু করলাম। পার্থ দিল রান্নার পরামর্শ আলু সরু সরু কেটে ব্যাসনে গুলে পকোড়া হবে মুড়ি খাওয়ার জন্য আর ঐ পকোড়া কিছু তা অর্ধেক ভাজা থাকবে ঐ দিয়েই হবে রাতের রুটি খাওয়ার তরকারী। হল ও তাই, সায়ন লাগলো আলু পিঁয়াজ কাটতে। আমরা লাগলাম আনুসাঙ্গিক কাজ করতে। রান্না ঘরে আজ ঢুকলাম আমি, তারক দা, আর পার্থ। পরে যোগ দিল সায়ন আর দাদা। পকোড়া দিয়ে মুড়ি খেতে খেতেই রান্নার কাজ ও এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলাম। খাওয়া দাওয়ার পর সব কাজ শেষ করে ঠিক হোল সবাই মিলে একটু ঘুরে ফিরে দেখা যাক জায়গা টা। আসলে প্রথম দেখায় এই চিরবাসা আমার কাছে বেস দারুন লেগেছে, কারন চারিদিকে লম্বা লম্বা গাছ, চারিদিক সবুজ, বেশ চারিদিকটা তেই আলো আঁধারির খেলা!! গাছের পাতার ফাঁক দিকে সূর্যের আলো জাগায়র রোম্যানটিসিজিম আরও বহু গুন বাড়িয়ে দিয়েছে!! সাথে আমাদের তাঁবুর সামনে দিয়ে একটা নালা চলে গেছে সেই জল টাই আমাদের রান্নার ও খাওয়ার এক এবং অন্যতম ব্যাবস্থা।জল খুব ঠাণ্ডা হলেও বেশ ঝক ঝকে পরিষ্কার জল কোন অসুবিধা হবে না অবশ্য হয়ওনি।

তাঁবু থেকে আর একটু ডান দিকে এগিয়ে গেলেই দেখা পাওয়া যাবে ভাগীরথী নদী কে তিনি তার বীর বিক্রম নিয়ে এগিয়ে চলেছেন গঙ্গোত্রীর দিকে। আর নদীর ধারার বিপরীতদিকে সামনে চোখ তুললে দেখা মিলছে ভাগীরথী তিন বোনদের। ঝকঝকে আবহাওয়া মনোরম পরিবেশে চলল নদীর পাড়ের আমাদের আড্ডা। সাথে ছবি তোলা ও। সূর্য প্রায় তখন অস্থ গামী, গায়ে গরম জামার অভাব মনে হতেই ফিরে এলাম আমাদের তাঁবুতে। ফিরে দেখি চিরবাসার নিস্তবতা ভেঙ্গে দিচ্ছে কিছু পরিবার এসে, এতো ছেলে মেয়ে, মহিলা, বাচ্ছা, বয়স্ক, বয়স্কা দের




এক সাথে চিৎকার চেঁচামেচি বিরক্ত করে তুলল আমাকে। একরাশ বিরক্তি নিয়ে একটু শান্তির জন্য হাতে চায়ের মগ নিয়ে আবার চলে গেলাম নদীর পাড়ে, ঠাণ্ডা লাগলেও বেশ শান্তি ছিল ঐ খানে।












চায়ে চুমুক আর ছুটে চলা নদীর ধারা কে দেখেই সময় কাটাচ্ছিলাম। সাথে স্বর্ণাভ আলোর বিচ্ছুরণ আর সেই আলোর খেলা ভাগীরথী পিকের মাথায়।

ঐ নৈস্রগীক আলোর খেলা দেখার জন্য ভাগ্য থাকাটাও খুব জরুরী, নাহলে দেখা মেলেনা। কি জানি কি ভাগ্য করেছিলাম। অনেকটা সময় কাটালাম ঐ নদীর তীরে। ইচ্ছা না থাকলেও ফিরতেই হচ্ছে, সূর্যের দেবতা সূর্যের আলো নিভিয়ে দিয়ে চাঁদ মামাকে তাঁর আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার আহ্বান করে দিয়েছেন আমাদের জন্য। আর তার আলোর ছটায় ভেসে যেতে লাগলো চারিদক, নদীর জলে তার আলোর বিচ্ছুরণ, কোনো চিত্র শিল্পী তার ক্যানভাসে তুলে ধরতে পারবে বলে মনে হয় না!!  রাতের খাওয়ার খেয়ে আবার একটু ঘুরে এলাম চাঁদের আলো তে আরও একবার দেখে নিলাম ভাগীরথী পিক কে, সেটা দেখে তাঁবুর আশ্রয়ে গেলাম। কিন্তু সেই ঘুম আর আশে না।


বিশেষ 
১.দয়া করে অপেক্ষা করুন পরের সংখ্যার জন্য, খুব তাড়া তাড়িই প্রকাশ করবো।
২.আপনাদের মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম, আশা করি জানাবেন। 
৩. যদি ভালো লাগে শেয়ার করবেন আপনার বন্ধু, বা আপনার পরিচিতদের মধ্যে!! 

ধন্যবাদ।। 
সুব্রত!! 

Monday, September 11, 2017

পলাশ, Flame of the Forest.

Common name: Flame of the Forest.
                          Bastard teak, battle of Plassey tree,
  • Assamese: বিপৰ্ণক B​ipornok, কিংশুক ​K​ings​uk, পলাশ polas​
  • ​Bengali: পলাশ palash • Sanskrit: किंशुक kimshuk,
  • Botanical name: Butea monosperma 

Family: Fabaceae (Pea family)



I was found at my own country which is India. When I was at my Rock Climbing practice at the occasion of Holi at Purulia District (West Bengal), The Flame of the Forest Or Palash is a medium sized tree​s​ is growing from 20 to 4​0​ feet high from the 0 (Zero) Laval, and it's trunk is usually crooked and twisted with irregular branches and rough, & the leaves are pinnate, with an 8-16 cm petiole and three leaflets, each leaflet 10-20 cm long.
​Types of Palash : Red, Orange, White, & Yellow. (Which was I show) ​

Special Point : ​A postal stamp was issued by the ​"​Indian Postal Department​"​ to commemorate this flower.

Thanks & Regards
Subrata Adak.



Thursday, August 24, 2017

Trek to Vasuki Tal 4900 mtr. (Part -2)


ফিরে এলাম আবার প্রথম সংখ্যার পর দ্বিতীয় সংখ্যা নিয়ে!!

ঘুম ভাঙল তারক দার ডাকে। সুব্রত, চল উঠে পড় চা খেতে যাবো। দেখি, সকাল হয়েছে পাখিরা ও ডাকা শুরু করেছে। হাল্কা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব, বেশ মনোরম আবহাওয়া, হাল্কা একটা গরমের জামা গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লাম দুজনে। একটু হাঁটা হাটি করে চা খেয়ে আবার হোটেলে। এরই মধ্যে ফিরে এসে দেখি আমাদের পোর্টার ভাই-রা এসে পৌঁছেছে হোটেলে। আলাপ হলও একজন লক্ষ্মী ভাই, আর একজন তুলারাম। ওদের সকালের খাওয়ার দিয়ে নিজেরাও খাওয়ার খেয়ে নিয়ে স্নান সেরে তৈরি হয়ে নিলাম, পোর্টার ভাই-রা আগেই চলে গেছে দলের মালপত্র নিয়ে। সাথে আমাদের গাড়ি ঠিক করে রাখার জন্য। গাড়ির আড্ডায় এসে আমাদের নির্ধারিত সীটে বসে পড়লেও আমাদের গাড়ির চালক বন্ধু টির দেখা নেই। কারন জানলাম তার এখনো গাড়ি ভরেনি তাই সে এখন যাবে না। প্রায় ১ ঘণ্টা পর তার গাড়ি ভরতে-ই গাড়ি ছেড়ে দিল। আমরা এখন চলেছি ভাগীরথী নদীকে আমাদের ডান দিকে রেখে। কিছু ক্ষণ চলার পর আবার বাম দিকে।

গাড়ি যত পাহাড়ের উপরের দিকে উঠছে প্রকৃতি দেবী ও নিজের রং ও রূপকে উজাড় করে ধরা দিচ্ছে আমার সামনে। পাহাড়ের সেই রূপ যে দেখেছে তার ডাক উপেক্ষা আর কেউ করতে পারেনি। সে যেই হোক। পোর্টার ভাইয়ে ডাকে ধ্যান ভাঙ্গল, বলল দাদা ইহা সে হি মিট্টি কা তেল উঠানা হ্যা। ড্রাইভার কো রুক-নে কে লিয়ে বোলো। বলা হোল, গাড়ি দাঁড়িয়ে ও গেলো যথা স্থানে।
 সাথে উপরি পাওনা হয়ে গেলো ওনার দোকানেই গরম চায়ের উষ্ণ অভ্যর্থনা। দোকান টি বেস বড় সামনের দিকে অনেক টা খোলা। আমার সদস্যরা দোকানের সামনেই বসে পড়েছে চেয়ার টেবিলে গায়ে রোদ লাগানোর জন্য, আর আমি!! একটু তারকাটা টাইপের, আমার অভ্যাস স্থানীয় মানুষের সাথে আলাপ করা, ওদের সাথে কথা বলা, ওদের কে জানা, আমার বেশ ভালোই লাগে, তাই আমি তখন ঐ দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়লাম গরম চায়ের আমেজ নিতে। দোকানের ঐ ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের সাথে ঠাণ্ডা হাওয়া বেশ লাগছিল, আর আশে পাশের মাথা তুলে দেখছি উঁচু পাহাড়ের মাথায় নতুন বরফের আস্তরণ। আর রাস্তা দিয়ে ছোটো ছোটো বাচ্ছা দের স্কুলের পোশাকে খেলতে খেলতে স্কুলে জীবনের দিকে ছুটে চলা দেখছি। আমার সাথীরা দোকান থেকে একটু আগেই একটা ছোটো গ্রাম টাকে দেখতে গেছে, দুঃখিত নাম জানি না, কারন আমি যাই নি। আমি তখন নিজের মানশিক ধাক্কা থেকে উঠার চেষ্টা করেচলেছি, আর ঐ চায়ের দোকানের মালকিনের সাথে গল্প করছি আর তার কাঠের উনুনকে  আমার নিজের সাধ্য মত জ্বালিয়ে রাখার চেস্টা করছি, উনুনে একটু একটু কাঠের জোগান দিয়ে। উনি তখন আলুর পকোড়া ভাজতে ব্যাস্ত। গরম পকোড়া খবরের কাগজের টুকরো তে আমার দিকে বাড়িয়ে দিলেন ও। আমি ও সে গুলোকে উদর পূর্তি করছি, আর কেরসিন তেলের অপেক্ষা করছি। তুলারাম এসে বলল দাদা ৪০০/- রুপিয়া দো। আমি উত্তর দিলাম কিতনা উঠায়া তেল?? উত্তর পেলাম ১০ লিটার। বল্লাম ইয়েতো কাফি হ্যা। লেকিন ঠিকসে দাম শুনা তো?? বলে, হ্যা আপ প্যাসা দিজিয়ে, তাও ৫০০/- নোট দিলাম, কিছু পরেই আমাকে অবাক করে ১০০/- টাকা ফেরত করে দিল, সাথে কেরসিন তেলের মালিক ও হাজির। দেখলাম সেও কিছু বলছে না টাকা নিয়ে। মনে মনে ভাবলাম যাক বাঁচা গেছে। বিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমাকে অবাক করলো আমি কোথাও এতো কম দামে কেরসিন তেল পাইনি। অনেক পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরেছি, কোথাও ৮০/- এর নীচে পাইনি। আবার ১০০/- টাকা লিটারে ও কিনেছি। কিন্তু কখনই ৪০/- টাকা লিটারে কিনিনি। ইতি মধ্যে আমার বাকি সদস্যরাও ফিরে এসেছে।
এইবার বিদায় জানানোর পালা। দোকানের মালকিন কে জিজ্ঞাসা করলাম কিত্না হুয়া?? উত্তর টা আমাকে বেস রীতিমত চমকে দিয়েছিল। ক্যায় দাদা!! আপ সে ভি প্যায়সা?? আপ যাইয়ে, ওর সাবধানী সে ওয়াপাস আইয়েগা। আমার কোন জোরই খাটলনা ওনার সামনে। এইটুকু সময়ের মধ্যেই আমাদের অজান্তেই আমাদের মধ্যে একটা এত সুন্দর আত্মীয়তা গড়ে উঠেছে বুঝতে পারিনি। শুধু অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। জানি না আবার কোন দিন দেখা হবে কিনা কিন্তু উনি অবলীলায় আমাকে এক অদ্ভুত আত্মীয়তার বন্ধনে বেঁধে দিলেন। আমি গাড়িতে বসেও ওনার দিকে তাকিয়ে আছি, আর উনি হাঁসিমুখে আমাদের হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছেন। গাড়ি চলছে গঙ্গোত্রির উদ্দেশে, আর আমি ভাবছি যার সাথে আমি এতো দিন কাটালাম তাকে আমি আজ ও বুঝতে পারলাম না আর এই মহিলা এই কিছু সময়ের মধ্যে আমাকে এতো আপন করে নিলেন। সত্যিই অদ্ভুত আমরা, কাকেও চিনতে কয়েক শত বছর লেগে যায় আর কাকেও চিনতে কিছু মুহূর্তই যথেষ্ট।
গাড়ি চলছে, আর তুলারাম বলে যাচ্ছে কোনটা কি। কোন জায়গার নাম কি ইত্যাদি।
শুধু দেখে যাচ্ছি কিন্তু কিছু মাথায় ঢুকছে না, কারন আমার মাথায় তখন আর কিছু নেই, আছে শুধু ঐ দোকানদার মহিলা, আর তার আপন করে নেওয়া, তার আতিথেয়তা। এরই মধ্যে ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। গাড়ীর ঝাঁকুনিতে ঘুম টা ভেঙ্গে গেলো। গাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বের করে দেখলাম জ্যাম। আর একটু মাথা তুলেতেই দেখতে পেলাম সুদর্শন পর্বতের। যে কোন রক্ত মাংসের মানুষ কে তার রূপ দিয়ে মোহিত করে দেওয়া তার কাছে কিছু না। কি তার রূপ। হটাৎ কে যেন বলল কি দেখছি রে?? শুধু বল্লাম সুদর্শন পিক। মনে হল সবারই জিজ্ঞাস্য হোল কই, কই, কই?? উত্তর দিলাম একদম সামনে সোজা সুজি উপরের দিকে দ্যাখ, ঐ যে, যে বরফে ঢাকা পাহাড় টাকে দেখা যাচ্ছে ওটাই সুদর্শন।
তার গুনমুগ্ধ রূপ নিয়ে আমার সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে আর পাহাড়ের পাক দণ্ডি বেয়ে পোঁছালাম গঙ্গোত্রীতে বিকেল ৪.০০ টে নাগাদ। ভাগীরথী নদীর তীরে হিন্দু ধর্মালম্বী দের পবিত্রতম তীর্থস্থল। ভারতবর্ষের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশী জেলার একটি শহর এই গঙ্গোত্রী। পৌরাণিক মতে রাজা ভগীরথের পূর্ব পুরুষদের পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য দেবী গঙ্গা এই গঙ্গোত্রী তে নেমে এসেছিলেন। দেবীর এই ধরা ধামে আশার আগে রাজা ভগীরথ নাকি এইখানেই অনেক দিন তপস্যাও করেছিলেন। চারিদিকে কান ফাটানো কোলাহল, চিৎকার চেঁচামেচি, অগণিত গাড়ির হর্নের আওয়াজ। মনে হচ্ছে যেন গোটা ভারতবর্ষ আজ এক জায়গায়। তাদের নানা ভাষা নানা পরিধান তাদের এক এক জনকে এক একজনের থেকে আলাদা করছে। আর ঐ পরিধানই জানিয়ে দিচ্ছে ওনারা কোথা থেকে এসেছেন। আমাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল এক ফটকের সামনে। না পুলিশ আর গাড়ি যেতে দিচ্ছেনা, তাই আমাদের গাড়ি পথের এইখানেই ইতি।
এই জায়গায় আমি এই প্রথম বার, তাই জায়গার চারি দিকে চোখ বোলাতে বোলাতেই গাড়ি থেকে মাল পত্র নামিয়ে ১৪০০/- টাকা গাড়ি ভাড়া মিটিয়ে হাঁটা শুরু করলাম এক চওড়া গলির রাস্তা দিয়ে। তার দুই দিকে অগুনতি পসরা। তাদের রং বেরঙের সামগ্রী সাজিয়ে বসে আছে গ্রাহকের আশায়। বেশ ভালোই লাগছিল দেখতে। বেশ কিছুটা হাঁটার পর গঙ্গোত্রী মন্দিরের ঠিক পিছনে বাম দিকে এক সিঁড়ি দিয়ে উঠেই কালি কমলি ধর্মশালা তেই আজ আমাদের রাত্রি বাস। বিশাল একটা ঘর পেলাম যাতে কিছু কম হলেও অনন্ত পক্ষে ২০ জন অনায়াসে থাকতে পারে। কিন্তু আমরা সাত জনই ঐ ঘরেই ঢুকে পড়লাম ৬০০/- টাকার পরিবর্তে। সমস্ত মাল পত্র রেখে আবার বেরিয়ে পড়লাম একটু জায়গা টা কে একটু ভালো করে দেখে নিতে। কারন তাগিদ যেন আমারই বেশী ছিল। মন বিস্ন কিন্তু জায়গা টা আমার কাছে নতুন। তাই দেখা টা খুব জরুরী। বাকি সময় টা এই দিক সেদিক, এই গলি সেই গলি ঘুরতে ঘুরতেই চলে এলাম গঙ্গার তীরে (ভাগীরথী) বসে রইলাম বেশ কিছু ক্ষণ।
মনে পড়ে গেলো রাজ কাপুর সাহাবের আর রবীন্দ্রর জৈন সাহাবের বিখ্যাত সেই বিখ্যাত সিনেমা "রাম তেরি গঙ্গা ম্যাইলি" সত্যিই আজ গঙ্গা ম্যাইলি হয়েছে, সেটা আশে পাশে চোখ বোলালেই বোঝা যাচ্ছে। আমার বয়স যখন দুই বছর তখনের সিনেমাটা হলেও আমার খুব পছন্দের একটা সিনেমা। কারন, দুই জন বিখ্যাত মানুষ, প্রথম রাজ কাপুর সাহাব ও দ্বিতীয় রবীন্দ্রর জৈন সাহাব যেমন তার ডিরেকশান আর তার অসামান্য সব গান, কতবার দেখেছি সিনেমা টা তার হিসাব নেই। আর সিনেমাটা আমাদের হাওড়া থেকে শুরু হয়ে গঙ্গোত্রী হয়ে আবার শেষ হয় হাওড়া হয়ে গঙ্গাসাগরে এটাও একটা বড় পাওনা। কি জানি কোন পাহাড়ের, কোন কোনায় সুটিং করেছিলেন মনে মনে খুঁজতে লাগলাম। যাক আর কিছু বলছি না। সন্ধ্যায় ৭.৩০ মিনিটে গঙ্গা মায়ের আরতি, যেটা দেখার মতো।
আগে ১০ - ১৫ বার হরিদ্বারের গঙ্গা আরতি দেখেছি, কিন্তু গঙ্গোত্রী তে এই প্রথম বার। বেস ভালোই লাগলো। মনটাও বেস ফুরফুরে হয়ে গেল। এইবার আমাদের পেট মহাশয় ও হাঁকডাক শুরু করেছে। (বিশেষ : এই গঙ্গোত্রী জায়গা টি সম্পূর্ণ রকমের নিরামিষ, এইখানে মাছ, মাংস, ডিম তো দূর অস্ত পিঁয়াজ, রসুন ও পাওয়া যায় না) রাতে রুটি স্যালাড আর ফুলকপি আলুর সবজী, মন্দ লাগলো না। জায়গা টি সম্পূর্ণ নিরামিষ হলেও দাম বেশ চড়া। যাই হোক, ডিনার সেরে চলে এলাম আমাদের ঘরে। এরই মধ্যেই একজন নক দিচ্ছে আমাদের দরজায়, না না, ভুল ভাবছেন, সে আর কেউ না ইনি নিদ্রার দেবী। রাতে বেশ ঠাণ্ডা, তাই লেপ কম্বল নিয়ে ঐ মেঝেতে পাতা গদিতেই শুয়ে পড়লাম। কি জানি কি ভাবছিলাম, আর কখন ঘুমালাম।


বিশেষ 
১.দয়া করে অপেক্ষা করুন পরের সংখ্যার জন্য, খুব তাড়া তাড়িই প্রকাশ করবো।
২.আপনাদের মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম, আশা করি জানাবেন। 
৩.যদি আমার লেখা ভালো লেগে থাকে তো সাবস্ক্রাইব করুন!! উপদেশ দিন, আরও ভালো লেখার ও উৎসাহ যোগান!!  


ধন্যবাদ।


Monday, August 7, 2017

Trek to Vasuki Tal 4900 mtr. (Part -1)

Vasuki Tal, It self it is the Base Camp of the Mt. Satopanth Expedition. (One of the killer Mountain in India)


            প্রথমেই বলে নেওয়া উচিৎ আমি ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গ বাসী, বাঙ্গালি ও বটে। বাঙ্গালি হওয়ার জন্য আমার মাতৃ ভাষা ও বাংলা। তাই এইবার ভাবলাম এই ব্লগ টি বাংলা তেই লিখবো। তো এই ব্লগটি বাংলাতেই লিখছি। আশা করি আপনাদের (পাঠক) দের বাংলা ভাষী দের ভালোই লাগবে। 



বিশেষ : 

১. If you do not understand the Bengali language then please           use the translator.  
২. If you won't or can't then please tell me I'll translate it.
  
      যেহেতু লেখা টি অনেক বড় তাই লিখতেও অনেক সময় লাগছে, তাই দুটি অথবা তিনটি সংখ্যায় প্রকাশ করবো। 



      আমার জীবনের প্রথম ট্রেক। এর আগে যত বার পাহাড়ে গিয়েছি সব গুলোই ছিল পর্বত অভিযান। এই প্রথমবার বেরিয়েছিলাম ট্রেক করতে। সেই ২০০৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষা  নিই  পর্বত অভিযানের, তারপর ২০০৭ এ আমার প্রথম অভিযান, কামেট, তারপর, ইন্দ্রাসন, ২০০৯ এ নিয়েছিলাম এডভান্স পর্বত অভিযানের শিক্ষা , তারপর  গিয়েছিলাম চোউখাম্বা, মনিরাং, কুন, রামজাক, নন্দাঘুণ্টি, নুন, ও আরও বিভিন্ন পর্বত অভিযানে, কোথাও হেঁসে ফিরেছি তো আবার কোথাও থেকে কেঁদে ফিরেছি।  


      যাই হোক, আমার এই লেখা তে খুঁজে পাবেন আমার  ব্যাক্তিগত জীবনের কিছু লুকানো না বলা কথা। 



      দিন টা মে মাসের মাঝা মাঝি সময়। 

​    মন টা সবে টুকরো টুকরো হওয়া শুরু হয়েছে, অনেক চেষ্টা করছি সব কিছু ঠিক করার, বার বার কথা বলছি, কিন্তু জোড়ার লাগা তো অনেক দুরের কথা, আরও বেশী বেশী করে ভেঙ্গে যাচ্ছে। কেন, তার কোন উত্তর পাইনি। যেন কোন এক নদীর প্রকাণ্ড পাড় ভেঙ্গে পড়ছে প্রচণ্ড জলের চাপে। আর এক একটা করে গ্রাম ঐ নদীর জলে ভেসে যাচ্ছে। বাঁধ দেওয়ার অপ্রাণ সমস্ত চেষ্টাই বৃথা হয়ে যাচ্ছে। শক্ত বাঁধ কতবার যে তুলছি তার কোন হিসাব নেই। জলের এক একটা ঝটকায় খড় কুটোর মতো করে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সব কিছু। আমি ও কিছু তেই ঠিক ঠাক ভাবে ভেসে থাকতে পারছি না। ঐ ভেসে যাওয়া খড় কুটো গুলো কে আপ্রাণ চেষ্টা করছি জাপটে ধরে ভেসে থাকার। ভাঙ্গা মন টা নিয়ে কিছু তেই কোন কাজে মন বসাতে পারছি না। কেউ ভালো কথা বল্লেও সহ্য হচ্ছে না। রাতের প্রিয় ঘুম গুলোও কেমন যেন উধাও হয়ে যেতে শুরু করলো। মোটা মুটি প্রায় সবার সাথেই কথা বলাও বন্ধ। খুব দরকার নাহলে কথা ও বলছি না!! সময়ের সাথে সাথে আমি যেন পাগল হয়ে যেতে বসেছি। চোখ বন্ধ করলেই ছবি ভেসে উঠছে সে, কাটানো সময় গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। তার প্রমাণ আমার ভেজা বালিশটাই পারবে দিতে।একটা সময় আমার সমস্ত প্রচেষ্টাই বার্থ হল। মনে হচ্ছিল সব ছেড়ে কোথাও পালাই, যেখানে থাকবো আমি আমার স্মৃতি গুলো। তখন ভাবলাম মন ঠিক করার রাস্তা একটাই। হয় পাহাড় আর না হয় কোন মন্দিরে!! যদি ও কিছু দিন আগে থেকেই ভাবছিলাম অনেক দিন হোল পাহাড়ের কাছে যাইনি। আমার প্রথম ভালোবাসা বা প্রথম ভালো লাগার সাথে দেখা করিনি। আমার সেই ভাবনা কেই কাজে লাগালানোর চেষ্টা করলাম। 
      আমার ভাঙ্গা মন  কে সেলাই করাটা খুব জরুরী হয়ে পড়েছিল। তাই সব কিছু ছেড়ে ছুট লাগালাম পাহাড়ের দিকে। সেই দিন যারা আমার সঙ্গ দিয়েছিল, একমাত্র এরাই জানত আমার সব কিছু, আমার দাদা সৌমেন্দু মাণিক, আর এক বন্ধু স্থানীয় দাদা তারক দা, আমার থেকে বয়েসে অনেক বড় হলেও আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বের, সঙ্গ দিল আমার আর এক বন্ধু পার্থ, আর এক ভাই সায়ন। এ ছাড়া আর একজন বাঘা। ও না গেলেও আমার সঙ্গ দিয়েছিল অন্য রকম ভাবে। এরা জানত সেই সময় আমার সাথে কি ঘটে চলেছে।      
        আমরা পাঁচ জনের একটা দল হয়ে গেলাম। বন্ধু বাঘার সাহায্যে ট্রেনের টিকিটের ব্যাবস্থা টাও হয়ে গেলো। শুধু বাড়ি থেকে সব কিছু ছেড়ে ছুঁড়ে ফেলে পালানোর পালা। ট্রেনে উঠে বসলাম হাওড়া স্টেশান থেকে ৩০এ মে উপাসনা তে। একটা জানালার ধার ধরে বসে বসে ছুটে চলা পাশের রেলের লাইন দেখতে দেখতেই ৩১ তারিখে পৌঁছলাম হরির-দ্বারে। অর্থাৎ হরিদ্বারে। চলে গেলাম মিশ্র ভবনে। ঘর পেলাম একে বারে এক কোনায় একদম গঙ্গা নদীর তিরে। এই ভবনের নিচ দিয়েই বয়ে চলেছে পবিত্র গঙ্গা নদী।

(প্রকৃত গঙ্গা কিন্তু এই নদী টি নয়, গঙ্গা টি বসে গেছে হরিদ্বার শহরাঞ্ছল থেকে কিছু টা দূরে) কিছু ক্ষণ বসে নিজেদের স্নান ও কিছু কথা বার্তা নিজেদের মধ্যে সেরে বেরলাম বাসের খোঁজে জানলাম পর দিন অর্থাৎ ১লা জুন ভোর ৫.৩০এ বাস হরিদ্বার বাস আড্ডা থেকে। জেনে ফিরে এলাম আবার নিজেদের জায়গায়। রাতের খাওয়ার খেয়ে তাড়া তাড়ি বিছানা নিলাম ঘুমের জন্য। কিন্তু বলে না কপালের নাম গোপাল, আমার এই খানেও সেই একই অবস্থা, কিছু তেই ঘুম আসে না। যত ভাবি ভুলে যাবো সব কিছু, কিন্তু স্মৃতি কখন মধুর কখনো বা অম্ল। বারে বারে চলে আসে তার সেই হাঁসি তে ভরা মুখটা চোখের সামনে। বার বার হাত চলে যায় মুঠো ফোনে, এই দেখার জন্য ফোন করেনি তো? মনে হওয়ার কারন মাত্র কটা দিন আগেও এই সময়  এই দূর যন্ত্রে আমাদের ভবিষ্যতের বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা চলতো। আর না শুয়ে থাকতে পেরে দরজা খুলে বারান্দায় চলে এলাম। সাথে দেখে এলাম আমার সব সদস্য গভীর নিদ্রায়!! ঠাণ্ডা হাওয়ার সাথে মন কে শান্ত করার চেষ্টা আর সাথে সিগারেটে টান দিচ্ছি আর মাঝে মধ্যেই নদীর জলে ভেসে যাওয়া বাতির দিকে তাকিয়ে রয়েছি, বোঝার চেষ্টা করছি কি জানি কি বার্তা, আর কার জন্য বার্তা নিয়ে চলেছে। ভাবছি ঐ বাতির মতো আমি যদি ভেসে চলে যেতে পারতাম ঠিকানা বিহীনের উদ্দশ্যে!! ঘন অন্ধকারে ঐ বাতির আলো কিছু একটা বার্তা নিয়ে অশান্ত জলের তোড়ে ভেসে চলেছে আর, নিজেকে না ডোবা থেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। আর ঐ অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন ঐ বারান্দায় শুয়ে পড়েছি আর ঘুমিয়ে ও পড়েছি জানি না। ঘুম ভাঙল এক প্রচণ্ড ঠাণ্ডার পরশে। ফিরে বিছানা তে শুতেই আবার ঘুম উধাও হলও। 

     ৪ টে তে সবাই কে  ঘুম থেকে দেকে তুলে দিয়ে নিজে নিজেকে পরিষ্কার করে তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম ভবন থেকে। বাইরে বেরিয়ে ই দেখি বৃষ্টি। আগের রাতেই অটোর ব্যাবস্থা করেই রাখা ছিল, তাকে ফোন করতেই সে হাজির আমাদের বাস আড্ডায় পোঁছানোর জন্য। ভাড়া ১০০/- টাকা মিটিয়ে, বাসের খোঁজে লেগে গেল আমার সব সাথীরা। আর সবাই জানত আমার মন ভালো নেই তাই আমায় কেউ কাজ করতে দিয়ে চায় না। মাল পত্র নিয়ে বসিয়ে দিল এক জায়গায়। বসে রইলাম। আর বাস আড্ডায় মাল পত্র নিয়ে বসে বসে বহু লোকের আনা গোনা দেখছি, তাদের নানা ভাষা না পরিধান দেখছি!! এখন তো চার ধাম যাত্রা চলছে!! তাই সারা পৃথিবী থেকে হিন্দু ধর্মাল্মবী মানুষ জন এই হরিদ্বারে তাদের বিশেষ পূর্ণা অর্জনের আশায়!! আন্দাজ করি ঘণ্টা ১.৩০ মিনিট বাদে সবাই ফিরল, বলল সুব্রত এইখান থেকে কোন বাস নেই আমাদের গত কাল ভুল ভাল খবর দিয়েছে। আমি কি বলবো বুজলাম না চেষ্টা টাও করলাম না। তাই মাথা নিচু করে বসেই রইলাম। বলল কি করবো এইবার তুমি বলও? দেখছি আমাকেই এইবার কিছু করতে হবে, না-হলে হবেনা, বল্লাম তাহলে আর কি চলে চল হৃষীকেশ, ওখান থেকে অনেক বাস আছে। অটোর ৪০০/- টাকা মিটিয়েই পার্থ আর তারক দা কে পাঠালাম বাসের টিকিটের জন্য। বাসে আমাদের ৫ জনের পাঁচ জনের সিটের ভাড়া ১২০০/- টাকা নির্ধারিত হোল। বাসে উঠে বসেছি চা ও বিস্কুট খেয়ে, সাথে দেখি তারক দা, পার্থ, আর আমার দাদা কিছু খাওয়ার ও কিনে এনে বলল সুব্রত আজ আমাদের এই খাওয়ার ই হবে বাসের খাওয়ার। এইখানে বলে রাখি সবাই আমাকে এই দলের দলনেতা বানিয়েছে, তাই যে যাই করুক আমাকে খবর দিচ্ছে। বলল এই খাওয়ার খেয়ে নেবো বাসে আর তারপর টা নেমে ঠিক করবো। খাওয়ার ছিল কেক, কলা, আপেল, আর পাউরুটি!! হটাৎ একটা সমস্বরে চিৎকার হর হর গঙ্গে। বুজলাম এইবার বাস ছাড়বে। ছাড়ল ও, এখন আমাদের গন্তব্য গাড়োয়াল হিমালয়ের উত্তরকাশী শহর (উচ্চতা প্রায় ৪৪৫০ ফুট) অর্থাৎ উত্তরের কাশী। যতটা পড়াশুনা করে জানতে পারি - কাশী অর্থাৎ আমরা এখন যাকে বেনারস বলেই জানি, ঐ শহরের সাথে নাকি এই শহরেরও অনেক মিল পাওয়া যায় তাই নাকি এই নাম। কি জানি আমি এখনো বেনারস দেখিনি, তাই হয়তো কোন মিলও খুঁজে পাইনি। তবে এইখানেই অবস্থিত ভারত বর্ষের বিখ্যাত পর্বতারোহণ শিক্ষার আধুনিক-তম প্রতিস্থান এই শহর উত্তরকাশীতেই, আমরা যাকে চিনি "নিম" অর্থাৎ "নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং"। এছাড়াও এই শহরের উপর দিয়েই বয়ে গেছে ভারতবর্ষের বিখ্যাত নদী যমুনা, ও ভাগীরথী। যাই হোক, বাসে প্রথমেই সিট নিয়ে অসুবিধা হল একটু, (বিশেষ : টিকিট কাটার সময় অবশ্যই টিকিটে বাসের সিট নম্বর লিখিয়ে নেবেন নাহলে বাসে সিট নিয়ে অসুবিধায় পড়তে পারেন) আমার সিট টি এক ভদ্র মহিলাকে দিয়ে দিয়ে রেখেছেন বাস কর্ত্রীপক্ষ। তাই আমার বসার সিট পেলাম একেবারে বাসের শেষের সারিতে। বাস এগিয়ে চললও উত্তরকাশীর উদেশ্যে পাহাড়ের পাক দণ্ডি বেয়ে। ফেলে চলেছি বিভিন্ন পাহাড়ি জনপদ কে। বেশ ভালোই লাগছিল এই পিছিয়ে যাওয়া জনপদ দেখতে। আর পাহাড় মানেই তো রঙের খেলা। তাই পাহাড় তার নিজের রঙে নিজেকে রাঙ্গিয়ে আমার কাছে নিজেকে দেখিয়ে চলেছে। আমি চলেছি প্রকৃতি দেবীর সেই রূপ, রস, গন্ধের স্বাদ নিতে নিতে। আহা কি তার রূপ, কি তার গন্ধ। একটু একটু করে যখন এগিয়ে চলেছি উত্তর কাশীর দিকে হাল্কা ঠাণ্ডার পরশে মন কে রোমাঞ্চিত করছে। ক্ষণিকের বাস যাত্রার বিরাম।একটু চা, আর আলুর পরটা সাথে আচার এক অদ্ভুত খাওয়ার পরিবেশন হোল, নাহ পারলাম না খেতে, আবার সেই অবসন্ন মনে কিছু ভালো লাগলো না। আর সবাই আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। এক এক করে সবাই বোঝায় আর খাওয়ার দরবার করে। কোন রকমে ওদের স্নমান রক্ষায় একটু খেয়ে আবার বাসে।

            বাস যতোই এগোয় ঠাণ্ডার পরশ একটু একটু করে জড়িয়ে ধরে আমাকে। ভাবছিলাম এই সময় তার সানিধ্য পেতাম কতই না ভালো লাগতো। কিন্তু ঐ "যেটা লেখা আছে তার বেশী কেউ কখনো পায়নি"। কি জানি আমার ভাগ্যে কি আছে। ধীরে ধীরে বরফ জড়ানো পাহাড়ের দেখা মিলল। সঙ্গে সঙ্গে মন রমাঞ্চিত হয়ে উঠলো। ঐ আলো আঁধারীর খেলা দেখতে দেখতেই চলেছি। কেউ চিৎকার করে জানতে চাইল সুব্রত পাহাড়ের নাম গুলো কি?? উত্তর দিলাম চিনি না। প্রায় দুপুর ৩টে নাগাদ বাস একটা বাম দিকে মোড় ঘুরে দাঁড়িয়ে গেল। বাসের কন্ডাক্টরের নির্দেশ চলো ভাই আগে-য়ে আপ-কা উত্তর-কাশী। আমাদের মালপত্র নামিয়ে ঠিক বাস আড্ডার উল্টো দিকেই উঠলাম। ঘর দেখেই পছন্দ হোল আর সাথে সাথেই মিটিয়ে দিতে হল ১১৫০/- টাকা আমাদের পাঁচ জনের জন্য। তারক দা, পার্থ, সৌমেন্দু দা, আর সায়নের কড়া নির্দেশ এল সুব্রত  ও সুব্রত দা এইবার সব ছাড়, যেখানে এসেছি সেই জায়গা নিয়ে ভাব, আমাদের প্রোগ্রাম নিয়ে ভাব।আমরা তোর/তোমার উপর সব ছেড়ে দিলাম। তুই/ তুমি আমাদের দল নেতা। তুই/তুমি যা বলবে/বলবি তাই হবে। এইবার যা স্নান সেরে নে, লাঞ্চে যাবো। সবাই স্নান না সারলেও আমি স্নান সেরে লাঞ্চ সারলাম আলুর পরটা, আর চা দিয়ে। পরে চন্দন দা কে ফোন করে কাছে গেলাম আমাদের প্রয়জনীয় প্রশাসনিক কাগজ পত্র তৈরি করানোর জন্য। সাথে পোর্টারের জন্য ও। ১৫০/- টাকা করে দিতে হোল গঙ্গোত্রী ন্যাশানাল পার্কে প্রবেশের অনুমতি প্রথম ৩ দিনের জন্য মাথা পিছু। এর পর যত দিন আরও কাটাবে ঐ পার্কে  তার প্রত্যেক দিন হিসাবে ৫০/- টাকা মাথা পিছু আরও দিতে হবে ফেরার সময় গঙ্গোত্রীর চেক পোস্টে। এ ছাড়াও আরও দিতে হোল তাঁবু লাগানোর জন্য প্রত্যেক দিন হিসাবে ১০০/- টাকা এক একটা তাঁবুর জন্য। (তিন জনের তাঁবুর জন্য ১০০/- টাকা, চার জনের তাঁবুর জন্য ২০০/- টাকা রান্নার তাঁবুর জন্য ২৫০/- টাকা আর টলেট তাঁবুর জন্য ৩০০/- টাকা প্রত্যেক দিন) আর পোর্টারের জন্য প্রত্যেক দিনের ৭০০/- টাকা নির্ধারিত হল। সব মিটিয়ে চন্দন দা কে বল্লাম পোর্টার কে আমাদের হোটেলে পাঠিয়ে দিও একবার, আলাপ টা সেরে রাখতে হবে। দপ্তর থেকে বেরিয়ে আগামী দিনের জন্য কিছু কাঁচা আনাজ বাজার সেরে, রাতের খাওয়ারের টাকা দিয়ে চলে এলাম আমাদের হোটেলে। ফিরে আগামী দিনের জন্য সব জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখলাম। আবার বেরতে হোল রাতের খাওয়ারের জন্য। পদে ছিল সদস্যদের দাবি মতো মুরগীর মাংস আর হাতে গড়া রুটি। শেষ করে ফিরলাম হোটেলে। আজও বিছানায় শুয়ে সেই একবার এই দিক আবার ওই দিক করতে লাগলাম। 

(বিশেষ : এইখানেই বলে রাখি মানে এই উত্তরকাশী তে সমস্ত ফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়, তারপর আর পাওয়া যায় না, পাওয়া যায় শুধু মাত্র BSNL আর Airtel কাজ করে গঙ্গোত্রী থেকে আরও কিছু টা পর্যন্ত, আর BSNL প্রায় চিরবাসার কাছা কাছি পর্যন্ত)

বিশেষ
১.দয়া করে অপেক্ষা করুন পরের সংখ্যার জন্য, খুব তাড়া তাড়িই প্রকাশ করবো।
২.আপনাদের মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম, আশা করি জানাবেন। 

ধন্যবাদ।